নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ অনেকেই এখন চিকিৎসাধীন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছেন অন্ত ৬০ জন। আর এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজার ৬১৩ জন।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও ভর্তি আছেন ৩৩ জন। আর চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৬৪ জন। গুলিতে আহতরা এখন মুখোমুখি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের। স্বাভাবিক জীবনে ফেরা হবে কি না, তা এখনও অজানা।

গেল জুলাইতে কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে রূপ নিলো, তখন ছাত্র-জনতার সাথে রাজপথে নেমেছিলো বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। নিজেদের ভবিষ্যতকে বাজি রেখে লড়েছিলো দেশের ভবিষ্যতের জন্য। যাদের অনেকেই পুলিশের গুলিবর্ষণে আহত হয়েছেন। এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে।

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন নবম শ্রেণীর ছাত্র আদহাম। ১৯শে জুলাই মিরপুর ১০ নম্বরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে পুলিশের চালানো গুলি বিদ্ধ হয় তার দুই পায়ে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ১৫ বছর বয়সী আদহাম।

একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহিদুল ইসলাম। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৯শে জুলাই পুলিশের নির্বিচার গুলিতে আহত হন ২৭ বছরের জাহিদ। তার মতো আরও অন্তত ৩৩ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন এই হাসপাতালে। কারও পায়ে, কারও পেটে আবার কারও হাতে গুলি লেগেছে।

একই চিত্র ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও। রাজধানীর গুলশানে বোনের কাছে বেড়াতে এসেছিলেন কুমিল্লার আরিফ। এলাকার বড় ভাইদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন ষষ্ঠ শ্রেণীর এ শিক্ষার্থী। ১৯শে জুলাই বাড্ডার শাহজাদপুরে পুলিশের গুলি লাগে আরিফের বাম পায়ে। চিকিৎসা চলছে, তবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়ে চিন্তিত আরিফ।

ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই মাঠে ছিলেন নরসিংদী শহীদ আনসার কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দিপু মিয়া। তেসরা আগস্ট নরসিংদী জেলখানার সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর চালানো পুলিশের গুলি লাগে দীপুর বাম পায়ে। একাধিক অস্ত্রোপচার হলেও এখনও শংকামুক্ত নয় পা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়র জেনারেল আসাদুজ্জামান জানান, সেখানে এ পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ২ হাজার ৬১৩জন। এখনও চিকিৎসাধীন অন্ত ৬০ জন। সবাইকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলন ও গনঅভ্যূত্থানে আহতদের তালিকা নির্ধারণে হাপাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্য নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।