আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আটাত্তর বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার বিশ্বের সবচে ক্ষমতাশালী দেশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত। বিরল ইতিহাস গড়ে তিনি আমেরিকান ও বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছেন। ট্রাম্পের এবারের বিজয় ২০১৬ সালের চেয়েও বড়। কারণ এবার ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতা চর্চার আরও দুটি ক্ষেত্রে সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদেও জয় পেয়েছে। ট্রাম্প ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ৩১২টি পেয়েছেন; তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৬টি। ট্রাম্প সংখ্যাগরিষ্ঠ জনপ্রিয় ভোটও জিতেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালে যখন প্রথম প্রেসিডেন্ট হন, তখন প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটরা তাঁকে আমেরিকা ও গণতন্ত্রের শত্রু বলেছিলো। এবার সেসব আক্রমণের পাশাপশি পরাজিত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে ফ্যাসিস্ট বলেছেন। সেই ট্রাম্প গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে বিপুল ব্যবধানে কমলা হ্যারিসকে হারিয়েছেন। সব নিন্দা সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প, জয় করেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ আমেরিকানের মন। তাই আমেরিকানরা আবার তাকে প্রেসিডেন্ট দেখতে চায়।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেতে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ২৭০টি দরকার হয়। ট্রাম্প তার চেয়ে বেশি পেয়েছেন বলে আমেরিকার ফক্স নিউজ সবার আগে ঘোষণা দেয়। মঙ্গলবার ভোটের দিন পর্যন্ত ট্রাম্প-কমলার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস ছিলো। কিন্ত ফল ঘোষণার শুরু থেকেই ট্রাম্প ও তার দল রিপাবলিকানদের জয়ের আভাস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।
আসছে জানুয়ারিতে ট্রাম্প আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবার কথা। ১৩২ বছর পর ট্রাম্প হবেন আমেরিকার আরেক ইতিহাস গড়া প্রেসিডেন্ট, যিনি আগেরবারের নির্বাচনে পরাজিত হলেও পরেরবার আবার নির্বাচন করে জিতেছেন।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডেমোক্র্যাট হিলারী ক্লিন্টনকে পরাজিত করেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে যান আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে। সেবার কারচুপি করে তাঁকে হারানোর অভিযোগ এনেছিলেন ট্রাম্প। সেই নির্বাচনের আগে-পরে ট্রাম্পের রাজনীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিলো আমেরিকা ও বিশ্বে। এবার যেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, সেজন্য ডেমোক্র্যাট শাসনামলে তাঁর বিরুদ্ধে বহু মামলা ও নানা অভিযোগ তুলে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু সব বাধা টপকে ট্রাম্প শুধু নির্বাচনের লড়াইয়েই পৌঁছাননি, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট এবং আমেরিকার দ্বিতীয় নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে সহজে বড় জয় পেয়েছেন।
ডেমোক্র্যাটিকদের এবারও আশা ছিল আমেরিকার গণতন্ত্রের দুইশ বছরের ইতিহাসে কমলা হ্যারিস প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নাম লেখাবেন; তা ব্যর্থ করে ইতিহাস গড়েছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প।