বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের ১৮টি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে এখনও ৯শ’ পলাতক আছে। এসব বন্দির মধ্যে জঙ্গি, দাগি অপরাধী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছে। পালিয়ে যাওয়া বন্দিরা কোথায় আছে সে সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য নেই। পলাতক ও আত্মগোপনে থাকা এসব পেশাদার খুনি-জঙ্গিকে নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে ও পরে দেশের ১৮টি কারাগারে হামলা হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সে সময় ৫টি কারাগার থেকে ২ হাজার ২৪১ বন্দি পালায়। এদের মধ্যে অনেক বন্দি আত্মসমর্পণ করেছেন ও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে এখনো প্রায় ৯০০ পলাতক আসামি আত্মগোপনে আছে ছদ্মবেশে।
কারাগারে নজিরবিহীন হামলা-ভাঙচুর-লুটপাটের আসামিরা পালিয়ে যায় কারাগারের অস্ত্র নিয়েও। অস্ত্র লুটের সঙ্গে পুড়িয়ে দেয়া হয় কারাগারে থাকা মামলার গুরুত্বপূর্ণ সব নথি ও বন্দিদের তথ্য। প্রমাণ সরাতে ভাঙচুর করা হয় কারাগারের সকল সিসিটিভি ক্যামেরাও।
সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত-উল-ফরহাদ জানান, তখন দেশের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার এবং সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, শেরপুর ও নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়ে যায়।
কারাগারের এই কর্মকর্তা সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত-উল-ফরহাদ বলেন, কারাগার থেকে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা হয়েছে। অনেকে গ্রেফতার বা আত্মসমর্পণ করেছে, বাকিদের ধরতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পেশাদার অপরাধীদের নথি পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে ফেলায় আসামি ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানায় র্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস। পলাতকরা যেন দেশ ছেড়ে যেতে না পারে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সারা দেশে ৬৮টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৮৭। ৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্দি ছিল ৯২ হাজারের কিছু বেশি। ২০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারাগারে থাকা বন্দির সংখ্যা ৫০ হাজার ২০১ জন জন।