বিশেষ প্রতিনিধি :সাগর পথে অবৈধ ভাবে লিবিয়া নিয়ে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় এবং নিরিহ মানুষকে মাফিয়া চক্রের নিকট বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ এনে নুর মোহাম্মদ নামে এক মানব পাচারকারীর নামে মামলা করেছে এক ভুক্তভুগি। এ ঘটনায় নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করেন মাদারীপুর ডিবি পুলিশ। বর্তমানে সে জেল হাজতে রয়েছে। মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, নুর মোহাম্মদ প্রায় শতাধিক লোককে লিবিয়া নিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, নুর মোহাম্মদের মতো দালালদের ফাঁদে পরে অনেক সময় বাংলাদেশি নাগরিকরা পাচারকারীদের প্ররোচনা-প্রতারণায় পড়ে ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় অবৈধভাবে আগমন করে থাকে। পরবর্তীকালে এসকল বাংলাদেশিকে বিভিন্ন দালালের কাছে বিক্রি করে দেয় তারা। দালালরা টাকার জন্য তাদেরকে শারীরিক নির্যাতন, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি শিকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট আটক এবং লিবিয়ায় বন্দিদশার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় ভুক্তভোগী অভিবাসীদেরকে শেষ পর্যন্ত বিপুল আর্থিক ক্ষতি, চরম দুর্ভোগ, হতাশা ও মানসিক যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়ে খালি হাতে দেশে ফিরে আসতে হয়।
জানা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দালাল এবং মানব পাচারকারীর প্ররোচনায় পড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে নুর মোহাম্মদ ইতি মানুষের কাছ থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বর্তমানে সে উত্তরখান মনির মার্কেট এলাকায় জমিদখল সহ নানান অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, নুর মোহাম্মদ তার শশুর বাড়ীর লোকজনকে সাথে নিয়ে ক্যাডার বাহিনী বানিয়েছে। সে এই ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এলাকার নিরিহ মানুষের জমি দখল করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবৈধভাবে লিবিয়া নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা মানব পাচারকারী নুর মোহাম্মদ উত্তরখান মধ্যপাড়া মিয়া বাড়ী তালতলা ও মনির মার্কেট এলাকায় কয়েকটি আলিশান বাড়ির মালিক।
উত্তরখান সরকার বাড়ী এলাকার লোকজন জানায় তার এক নিকট আত্মীয়র ভয়ে এলাকার লোকজন তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না। এছাড়াও তারা আরো বলেন, নুর মোহাম্মদ এলাকার মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ অভিবাসনের ঝুঁকি, নেতিবাচক প্রভাব এবং এর ভয়াবহতা তুলে ধরে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানোর হলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দালাল চক্র তাদের অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে।
দালাল নুর মোহাম্মদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে তার গ্রামের লোকজন এবং উত্তরখান মাজার এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে এসেছে। এলাকাবাসী জানান অশিক্ষিত এই নুর মোহাম্মদ একসময় ঠিক মতো দু'বেলা দুমুঠো ভাত খাইতে পারতো না। বিদেশে মানব পাচার করে বর্তমানে সে ৩০-৪০ কোটি টাকার মালিক। উত্তরখান এলাকার বাসিন্দারা জানান, তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধীক মানব পাচার মামলা রয়েছে।