অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রামে ফটিকছড়িসহ কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত থাকলেও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে মিরসরাইয়ের কয়েকটি ইউনিয়ন।
এদিকে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারি উপজেলার কিছু জায়গায় পানি নামতে শুরু করলেও অনেক স্থানে এখনও পানিবন্দি রয়েছে মানুষ। ফেনী নদীর পানি বাড়তে থাকায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নতুন করে কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন।
তিনি জানান উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। করের হাট, হিংগুলী, জোরারগঞ্জ, ধুম, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছড়া ইউনিয়নের অনেক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ইউএনও মাহফুজা জেরিন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ফেনী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যার কারণে নতুন করে কাটাছড়া ইউনিয়ন নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এ ইউনিয়নটিতে আগে পানি উঠেনি। আরও অনেক স্থানে পানি বাড়ছে।
যেসব ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে সেগুলোর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়গুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৬০ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন দুর্গত এলাকা থেকে নৌকা নিয়ে বন্যা আক্রান্ত লোকজনকে উদ্ধার করে আনা হচ্ছে তাদের অনেকেই স্বজনদের বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি, বিভিন্ন বিত্তবান লোকজন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসছেন।
অন্যদিতে হালদা নদীর পানি আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সোহাগ তালুকদার।
তিনি বলেন, “টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গত চার দিন ধরে হালদা নদীর বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবারও পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও কিছুটা কমেছে।”
প্রকৌশলী সোহাগ জানান, শুক্রবার হালদা নদীর পানি নারায়নহাট পয়েন্টে ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বৃহস্পতিবার ছিল ১৬৮ সেন্টিমিটার উপরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী সোহাগ বলেন, ফটিকছড়ি অংশে ২২টি পয়েন্টে হালদা নদীর বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার মধ্যে তিনটি পয়েন্ট বিলীন হয়ে গেছে।
“হাটহাজারির ফরহাদাবাদে হালদা নদীতে বাঁধ ছিল না। নদীর তীরে বল্ক বসানো ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তীর উপচে পানি উপরে উঠতে শুরু করেছিল। রাতে পারের ব্লক দেবে গিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে।”
ফটিকছড়ি উপজেলায় কিছু স্থানে পানি কমতে শুরু করলেও বেশিরভাগ স্থানে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক।
ইউএনও জানান, বাগানবাজার, দাঁতমারা, নারায়নহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। পাইন্দং, ভুজপুর, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি, সমিতির হাট, ভক্তপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত আছে।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত ত্রাণ থাকার পরও পানি বেশি হওয়ায় কয়েকটি স্থানে আমরাদের ত্রাণ পৌঁছাতে কষ্ট হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ স্থানে পৌঁছানো হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান জানান, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি এলাকায় বন্যা কবলিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত এলাকা ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন।
তবে বন্যা পরিস্থিতি আগের দিনের তুলনায় উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply