নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। নভেম্বরের প্রথম চার দিনেই সারাদেশে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ এবছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ৩২০ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজধানীতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ সব থেকে বেশি। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও ডেঙ্গু রোগীতে ভরে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবছর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ। থাকতে পারে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই মানুষকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি এই রোগের বাহক এডিস মশা নিধনে সংশ্লিষ্টদের আরও তৎপর হতে বললেন তারা।
১২ বছরের ফাবিহা গত ৮দিন ধরে ভর্তি রয়েছে রাজধানীর উত্তরার আইচি হাসপাতালে। প্রচন্ড জ্বর আর গা-ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এলে পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয় তার। রক্তের প্লাটিলেট আশংকাজনক হারে কমে যাওয়ায় বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয় ফাবিহার শরীরে ।
এরকম ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে রাজধানীর প্রায় সব হাসপাতালে প্রতিদিন ভিড় করছেন রোগীরা। চিকিৎসকরা কাউকে ওষুধ দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাসায়। আবার যাদের ঝুঁকি ্আাছে তাদের ভর্তি করিয়ে নিচ্ছেন হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে, ৬৫ হাজার ৭৬৪জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩২০ জনের। শুধু অক্টোবরেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩০ হাজার ৮শ ৭৯ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জনের। আর এ মাসের প্রথম চার দিনেই মারা গেছে ২৩ জন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর চিত্র
মাস আক্রান্ত মৃত্যু
জানুয়ারি ১০৫৫ ১৪
ফেব্র“য়ারি ৩২৯ ০০
মার্চ ৩৫১ ০০
এপ্রিল ৫০৪ ০২
মে ৬৪৪ ১২
জুন ৭৯৮ ০৮
জুলাই ২৬৬৯ ১২
আগস্ট ৬৫২১ ২৭
সেপ্টেম্বর ১৮০৯৭ ৮০
অক্টোবর ৩০৮৭৯ ১৩৪
নভেম্বর (৪ তারিখ পর্যন্ত) ৩৯৫১ ২৩
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও নারীরা। অসচেতনতা ও প্রাথমিক পর্যায়ে গুরুত্ব না দেওয়ায় অনেকেই শিকার হচ্ছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতার।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মশক নিধন জরুরি হলেও সিটি কর্পোরেশনের কোন তৎপরতা চোখে পড়ছে না বলে দাবি রাজধানীবাসীর। তবে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে জনসচেতনতা মূলক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
এবছর ডেংগুর প্রকোপ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই মুহূর্তে হটস্পট ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে এডিস মশা নিধনের কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করেন তারা।
Leave a Reply