
নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার ১ নং দুল্লা ইউনিয়নের বর্তমান বিএনপির আহ্বায়ক কাজী আবুল হাশেমকে ঘিরে নানা অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, তিনি রাজনৈতিকভাবে সবসময় সুযোগসন্ধানী ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাথেই ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
কাজী আবুল হাশেম একসময় আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির সক্রিয় নেতা দাবি করলেও তার রাজনৈতিক জীবনে কখনো জেল খাটতে হয়নি। স্থানীয়রা বলছেন, আওয়ামী লীগ শাসনামলে সক্রিয় বিএনপি নেতা হয়েও জেলে না যাওয়া বিরল ঘটনা।
পরিবারকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার ছেলে মেহেদী হাসান মিম বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রীর সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে ঘুষের বিনিময়ে ছেলেকে চাকরি পাইয়ে দেন তিনি। এলাকাবাসীর মতে, যদি প্রকৃত বিএনপি পরিবারের সদস্য হতো, তবে সে চাকরি পাওয়ার সুযোগ পেত না।
মিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন মানুষকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে সুবিধা আদায় করেন। এভাবেই পরিবারটি অসৎ উপায়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবসা
আবুল হাশেম প্রকাশ্যে নিজেকে পাথরের ব্যবসায়ী দাবি করলেও স্থানীয়রা জানান, তার কোনো বৈধ পাথরের ব্যবসার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গত দুই বছরে কারও কাছে পাথর সরবরাহের তথ্যও নেই। তবুও ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে পাথরের ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন।
প্রতারণা ও মামলা
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাজী আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণামূলক মামলা ও অর্থ আইনে মামলা রয়েছে। কিছুদিন আগে সরকারি গাছ চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেও টাকা খরচ করে তিনি রক্ষা পান বলে অভিযোগ।
চতল গ্রামের বাসিন্দা ফারুক বলেন,
> “যে ব্যক্তি সামান্য সরকারি গাছের লোভ সামলাতে পারে না, সে মানুষের সেবা করবে কীভাবে? দেশের উন্নয়ন তো দূরের কথা, সমাজের জন্যও সে অভিশাপ।”
বিএনপির ভেতরে ক্ষোভ
স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির জন্য কাজ করে তারা হামলা-মামলার শিকার হলেও, আবুল হাশেম কখনো কোনো ভোগান্তির শিকার হননি। বরং এখন উল্টোভাবে তিনি তাদের উপর খবরদারি করেন।
মুখোশ উন্মোচনের দাবি
স্থানীয়দের মতে, কাজী আবুল হাশেম ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে টাকার জোরে সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন,
> “এমন দুর্নীতিবাজ ও সুযোগসন্ধানী লোকদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবি। বিএনপির উচ্চপর্যায় কেন তাকে এখনো দলে রেখেছে—তা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।”
স্থানীয়দের দাবি, কাজী আবুল হাশেমের মতো ব্যক্তির কারণে শুধু বিএনপি নয়, পুরো রাজনৈতিক সংস্কৃতিই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুনির্দিষ্ট শাস্তির দাবি উঠেছে এলাকাজুড়ে।
Leave a Reply